ফ্রিল্যান্সিং-এ প্রতারণা !
বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং বা আউটসোর্সিং শব্দ দুটি বাংলাদেশে অনেকের কাছেই পরিচিত। ঘরে বসে মাসে আয় করা যায় লাখ লাখ টাকা। এমনই সময়োপযোগী পেশার নাম ফ্রিল্যান্সিং। বাংলাদেশে রয়েছে এই পেশার বিশাল সম্ভাবনা। তাই এই পেশাতে অনেক তরুণ তরুণীরা প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। ফলে দেশে গড়ে ওঠছে অসংখ্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্র।
সম্প্রতি গড়ে ওঠা এসব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মান নিয়ে নানা কথা শোনা যাচ্ছে। প্রতারণা করা হচ্ছে নতুনদের সাথে। কি করলে প্রতারণা কমানো যায়।
এই বিষয়ে গ্রেট এন্ড স্মার্ট টেকনোলোজী লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেহেরাব হোসেন মেহেদী বলেন, বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সিং করার অবারিত ক্ষেত্র রয়েছে। সেজন্য দেশের চারপাশে ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে ওঠছে। তবে এই প্রতিষ্ঠানগুলো বেশিরভাগই মানসম্পন্ন না। বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানই আউটসোর্সিং কাজ করে হাজার হাজার টাকা আয় করার স্বপ্ন দেখিয়ে কোর্স করায়। কিন্তু প্রশিক্ষণের পরে আউটসোর্সিং কাজ করতে গিয়ে কোন টাকা আয় করতে না পেরে বেশির ভাগ তরুণ তরুণীরাই ঝরে যায়।
কিছু নামধারী ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে যারা চটকদারি বিজ্ঞাপন দিয়ে নতুন ফ্রিল্যান্সারদের লোভ দেখায়। নানাভাবে টাকা ইনকামের প্রলোভন দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। একমাসে কামানো যায় ৫০ হাজার টাকা, এক মাসে ফিল্যান্সার, তিন মাসে ফ্রিল্যান্সার তৈরি এমন সব লোভনীয় অফার। ফলে ঝেঁকে আসে নতুনরা। এসে কোর্স করে। কোর্স শেষে কাজ করতে গিয়ে দেখা যায় আর কাজ করতে পারছে না। তারা হতাশ হয়ে পড়ছে।
এর কারণ হলো এক মাসে বা তিন মাসে কোন ফ্রিল্যান্সার তৈরি হয় না। প্রাথমিক ধারণা লাভ করা যায়। পেশাদারি ফ্রিল্যান্সার হতে হলে একজন শিক্ষার্থীকে ধৈর্য ধরে এক বছর শুধু শিক্ষা লাভ করতে হবে। আর এই প্রতারণার অন্যতম কারণ হলো নতুনরা না বুঝেই প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে।
অনেক স্টুডেন্টরাও মনে করে শুধু আউটসোর্সিং-ই হয়ত একটা কোর্স। কিন্তু এটা অনেকেই জানে না আউটসোর্সিংয়ের কাজের নিদির্ষ্ট কোন গণ্ডি নেই। যে যেই কাজ করতে পছন্দ করে, সে যদি ওই কাজটা দক্ষতার সাথে করতে পারে তবে তা দিয়েই আউটসোর্সিং করা যায়। তাই এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক হতে হবে। এ সব প্রতিষ্ঠানের কারণে দিন দিন তরুণরা প্রতারিতই শুধু হচ্ছে না, সারা দেশে সবার কাছে ফ্রিল্যান্সিং এর গ্রহণযোগ্যতা ও বিশ্বাস হারাচ্ছে।
এক্ষেত্রে আমি বলব তরুণ তরুণীরা যারা ফ্রিল্যান্সিং কাজ করতে চায় তারা যেন প্রতিষ্ঠান বিষয়ে জেনে শুনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে। এ বিষয়ে মিডিয়াতে প্রচারণা চালাতে হবে। আর সরকারকেও এদিকে নজর দিতে হবে। ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান যারা শুরু করবে তারা প্রশিক্ষিত কিনা, এবিষয়ে কার্যক্রম চালানোর জন্য যে জনবল আর অভিজ্ঞতা থাকার কথা সেগুলো আছে কিনা। থাকলে সরকার অনুমোদন দিতে হবে। তাহলে দেশে ভুয়া প্রতিষ্ঠানের জন্ম নিতে পারবে না। আর নতুন শিক্ষার্থীরাও প্রতারিত হবে না।